রাকিব হাসান, মাদারীপুর।
মাদারীপুর
সরকারি কলেজে থেকে চার শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার মেডিকেল কলেজে চান্স
পেয়েছেন।শুধু শাহারিয়ার, তামান্না, অমিত, বা নাফিজা নয়, ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে মাদারীপুর
সরকারি কলেজ থেকে মেডিকেলে ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, চুয়েটও পড়ার
সুযোগ পেয়েছেন ৫ জন শিক্ষার্থী।
আর এই
কলেজ থেকে মেডিকেলে সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- বগুড়া মেডিকেল কলেজে অমিত
, সিলেট মেডিকেল কলেজে তামান্না , ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে নাফিজা, রাঙামাটি মেডিকেল
কলেজে শাহারিয়ার ।
শাহারিয়ার
। দুই ভাই বোনের মধ্যে শাহারিয়ার বড়। বাবা মাহবুব হোসেন একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
সহকারী শিক্ষক। মা গৃহিণী। তাদের স্বপ্ন ছিল বড় ছেলে আল শাহারিয়ার চিকিৎসক হবে। সেই
স্বপ্ন আজ বাস্তবায়নের পথে। ৪ এপ্রিল এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় শাহারিয়ার রাঙ্গামাটি
মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়ে তিনি আবেগাপ্লুত।শাহারিয়ার
বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার কুলপুদ্দী এলাকায়।
শাহারিয়ার
বলেন,মাদারীপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছি। ছোট থেকে বাবা-মা আমার জন্য
খুব কষ্ট করেছেন। আমি চব্বিশ ঘণ্টা মধ্যে নামাজ আর খাবার খাওয়ার সময়টুকু ব্যয় করতাম
আর বাকি সময় পড়া নিয়ে সবসময়ই ব্যস্ত থাকতাম। পড়তে আমার কাছে অনেক ভালো লাগতো।আর
বাবার প্রচেষ্টা আর মায়ের পরিশ্রম আজ কাজে লেগেছে। বাবা-মা ও শিক্ষকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়
আজ আমার সফলতা। স্বপ্ন আজ বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে। কেমন লাগছে তা ভাষায় প্রকাশ করতে
পারব না। সবার কাছে শুধু দোয়া চাই।
মেডিকেল
কলেজে চান্স পাওয়া শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, স্বপ্ন ছিল ছেলেকে ডাক্তার বানাব।
সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে। খুবই ভালো লাগছে। তবে তার লেখাপড়ার পেছনে তার মায়ের অবদান
সবচেয়ে বেশি। সেই তাকে বেশি দেখভাল করত। এ ছাড়া শিক্ষকদের পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা তো আছেই।
শাহারিয়ার
মতোই মাদারীপুর সরকারি কলেজে থেকে আরো তিন জন শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে ভর্তি
পরীক্ষায় চান্স পেয়েছেন। তারা হলেন, অমিত,তামান্না, নাফিজা।
তামান্না
আক্তার তার পিতার নাম মোঃ শাজাহান মিয়া।তিনি মাদ্রাসার সাবেক প্রিন্সিপাল।ছয়
ভাই ছয় বোনের মধ্যে তামান্না ১০তম।তার বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার থানতলি এলাকায়।নাফিজা
আক্তার, মাদারীপুর সদর উপজেলার হাজরাপুর এলাকার আবুল খায়েরর মেয়ে।তার বাবা চরমোগুরিয়া
কলেজের অধ্যক্ষ। এবং অমিত মাদারীপুর সদর হাউসদি এলাকার অমূল্য মন্ডলের ছেলে তার একজন
ব্যবসায়ী।
অমিত
বলেন, খুবই ভালো লাগছে। আব্বু-আম্মুর ইচ্ছা ছিল সরকারি মেডিকেলে যাতে চান্স পায়। নিজেরও
প্রত্যাশা ছিল। এখন সেটি পূরণ করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। চিকিৎসক পেশায় মানুষকে সেবার
করার একটি মোক্ষম সুযোগ রয়েছে। আমার সফলতার পেছনে আব্বু-আম্মু, বড় বোন এবং শিক্ষকদের
অবদান রয়েছে।
তামান্না
আক্তার বলেন,আমি সিলেট মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়ে অনেক আনন্দিত। আজ আমার আর আমার পরিবারের
স্বপ্নপূরণ হয়েছে।আমি মহান আল্লাহ তাআলার কাছে কৃতজ্ঞ প্রকাশ করি।
নাফিজা
বলে,আমার খেয়ে না খেয়ে পড়ালেখার সার্থক পূর্ণ হয়েছে আমি মহান আল্লাহতালার কাছে কৃতজ্ঞ
প্রকাশ করি। আমার বাবা মার ইচ্ছাই আর শিক্ষকদের সহযোগিতায় আমি আজ এইখানে আসতে
পেরেছি।
অধ্যক্ষ
নিত্যানন্দ হালদার বলেন, পদ্মার এপারের কলেজটি সব চেয়ে পুরাতন এবং ঐতিহ্যবাহী। এখানে
নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের পরিবারের সন্তানরা বেশি লেখাপড়া করে। তবুও কলেজটি তার ঐতিহ্য
ধরে রেখেছে।
অধ্যক্ষ
হুব্বুল কবির বলেন, ৪ এপ্রিল মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর আমরা
খবর নিয়ে জানতে পেরেছি কলেজ থেকে এ বছর ৪ জন শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে
পড়ার সুযোগ পেয়েছে।
অধ্যক্ষ
কামাল হোসেন বলেন, শিক্ষকরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে।
শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থীদের সফলতা আসছে। তিনি শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ
কামনা করেন।
মাদারীপুর
সরকারি কলেজের (ভারপাপ্ত) অধ্যক্ষ জামাল মিয়া বলেন, যে সকল পরিক্ষার্থীরা
বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে তাদেরকে শুভকামনা। এছাড়াও প্রতি বছরেও আমাদের
কলেজ থেকে মেডিকেল পরীক্ষা, ইঞ্জিনিয়ারিং, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় এই কলেজের
শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করে আসছে। এ বছরও মেডিকেলে সেই সুনাম রেখেছে কলেজের শিক্ষার্থীরা।
You have to login to comment this post. If You are registered then Login or Sign Up